Tuesday, March 22, 2016

> শব্দের চেয়ে ৬ গুণ দ্রুতগতিতে চলবে প্লেন!


শব্দের চেয়ে ছয় গুণ দ্রুতগতিতে উড্ডয়নে সক্ষম এমন একটি প্লেন আনার উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে প্লেনটির নির্মাতা আমেরিকান মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও উন্নততর প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৭৬২ মাইল (১২৩৬ কিমি) বেগে উড়তে সক্ষম একটি মিলিটারি প্লেন নির্মাণ করছেন, যা শব্দের তুলনায় ছয়গুণ এবং কনকর্ডের তুলনায় তিনগুণ দ্রুততর।
এই প্লেনগুলো সাধারণ জেটের মতো বায়ু সংকোচনে ফ্যান ব্লেইডের ব্যবহারের পরিবর্তে প্লেনের সম্মুখগতির ফলে সৃষ্ট ধাক্কায় সংকুচিত বায়ুর মধ্যে জ্বালানী ব্যবহারের মাধ্যমে উড়বে। বিগত বছরগুলোতে এ প্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণার ফসল হিসেবে প্রকল্পটি অচিরেই আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বলে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলীরা।
প্রতিষ্ঠানটির অ্যারেনটিক্স বিভাগের প্রধান অরল্যান্ডো কার্ভালহো বলেন, সম্প্রতি এই অগ্রগতি ‘আরও দ্রুতগতিতে’ হচ্ছে, তবে এক্ষেত্রে উন্নতির আরও অনেক বাকি আছে।
প্রকল্পটির চেয়ারম্যান মেরিলিন হিউসন বলেন, “কম খরচের মধ্যেই যে হাইপারসনিক প্লেন বানানো সম্ভব তা আমরা প্রমাণ করতে যাচ্ছি। আমরা ধারণা করছি এফ-২২ আকারের এমন একটি প্রদর্শনী প্লেন নির্মাণ ও উড্ডয়নে ১ বিলিয়নের কম ব্যয় হবে।”
কনকর্ডের ম্যাক ২ গতিসীমা অতিক্রমের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিলো এর নির্মাণসামগ্রী। অন্যদিকে এসআর-৭২ এর ক্ষেত্রে এই প্রতিবন্ধকতা এড়াতে প্লেনটি স্পেইস শাটলের মতোই সিরামিক টাইলস দিয়ে ঢাকা থাকবে, যার ফলে প্লেনটি ম্যাক ৬ গতিসীমায় পৌঁছতে সক্ষম হবে।
এসআর-৭২ নামের এই প্লেন ২০৩০ সাল থেকে চালু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০৩ সালের ২৩ অক্টোবর শেষবারের মতো উড়েছিল বিশ্বের প্রথম সুপারসনিক যাত্রীবাহী প্লেনগুলো।

> ধূমপান ছাড়তে চান? উপায় জানাচ্ছে নতুন গবেষণা


ধূমপান ছেড়ে দেবেন বলে আপনি কতবার প্রতিজ্ঞা করেছেন আর কতবার প্রতিজ্ঞা ভুলে আবারও ঠোঁটের ডগায় রেখেছেন সিগারেট? ধূমপান যাঁরা করেন তাঁদের মধ্যে অর্ধেক জন মনে করেন একটু একটু করে কমাতে থাকলে তবেই এই অভ্যাস ত্যাগ করা যায়।  আবার আর এক দলের বক্তব্য, ছাড়তে গেলে একবারে এক ঝটকায় ছাড়তে হয়। ধূমপানের এই অভ্যাস নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিনে। প্রায় ৭০০ জন ধূমপায়ীকে চিহ্নিত করেন গবেষকরা।
তাঁদের ভাগ করা হয় দু’টি দলে। একদল যাঁরা একদিনে ধূমপান ত্যাগ করবেন আর অন্যদল যাঁরা একটু একটু করে ধূমপানের মাত্রা কমিয়ে দেবেন।  দেখা গিয়েছে, যাঁরা একদিনে ধূমপান ছেড়েছেন, তাঁদের মধ্যে ফের এই বদঅভ্যাসে ফিরে যাওয়ার হার অপেক্ষাকৃত কম। যাঁরা ৪ সপ্তাহ ধরে একটু একটু করে ধূমপান ত্যাগ করার পণ রেখেছিলেন, তাঁদের তুলনায় অনেকটাই সফল এক ঝটকায় ধূমপানত্যাগীরা।
তবে ধূমপান ছাড়লে শরীরে যে প্রভাব পড়তে পারে, সেই কথা মাথায় রেখে সমীক্ষার অন্তর্ভুক্ত সবাইকেই প্রয়োজনীয় মেডিকেশন দেওয়া হয়েছিল।  শেষ পর্যন্ত গবেষণার এইটিই সিদ্ধান্ত যে ধূমপান ছাড়তে হলে মনের জোর নিয়ে একবারে ছেড়ে দেওয়ার পণ নেওয়াই ভাল। তবে যাঁরা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এর পাশাপাশি কিছু মেডিসিন নেওয়া প্রয়োজন যাতে ‘উইথড্রয়াল’ না হয়।

> বিনা পয়সার যে খাবারটি আজীবন যৌবন ধরে রাখে ও নতুন চুল গজায়, দেখে নিন কিভাবে খাবেন…

সমস্যা সমাধান ও রোগ নিরাময়ের জন্য আমরা কত কিনা করি। চিকিৎসা করতে গিয়ে বেশ ক্ষতি ডেকে আনি নিজেদের জন্যই। কষ্ট লাঘবে তখন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টা মাথায় থাকে না। বিশেষ করে টাইফয়েড জ্বর, ডায়রিয়া, কলেরার মতো পেটের রোগে অ্যান্টিবায়োটিকও চলে আকছার।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওই সব ওষুধগুলির দামও অনেক সময় নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে হয়ে যায়। অথচ আমাদের হাতের কাছেই কিছু ভেষজ গাছ রয়েছে, যেগুলি অত্যন্ত অল্প দামে বা একটু খুঁজলে বিনামূল্যেও পাওয়া যায়, আমরা জানি না। অনেক সময় জেনেও, বিশ্বাস হয় না। তেমনই একটি ভেষজ উদ্ভিদ হল থানকুনি।
থানকুনি আমাদের অতিপরিচিত পাতা। পুকুরপাড় বা জলাশয়ে হামেশাই দেখা মেলে। কথায় বলে, পেট ভালো থাকলে মনও ফুরফুরে থাকে। চিকিত্‍সকরাই বলছেন, থানকুনি পাতার এমন ভেষজ গুণ রয়েছে, মিয়মিত খেতে পারলে, পেটের অসুখে কোনও দিনও ভুগতে হবে না। শরীর-স্বাস্থ্য তো সতেজ থাকেই, ছোট থেকে খাওয়াতে পারলে বুদ্ধিরও বিকাশ হয়। দেখে নেওয়া যাক, যৌবন ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে থানকুনি পাতার ভেষজ গুণগুলি।
১. পেটের রোগ নির্মূল করতে থানকুনির বিকল্প নেই। নিয়মিত খেলে যে কোনও পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পেট নিয়ে কোনও দিনও সমস্যায় ভুগতে হয় না।
২. শুধু পেটই নয়, আলসার, এগজিমা, হাঁপানি-সহ নানা চর্মরোগ সেরে যায় থানকুনি পাতা খেলে। ত্বকেও জেল্লা বাড়ে।
৩. থানকুনি পাতায় থাকে Bacoside A ও B। Bacoside B মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে ও রক্ত চলাচল বাড়ায়। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৪. থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
৫. মৃতকোষের ফলে চামড়ায় অনেক সময়ই শুষ্ক ছাল ওঠে। রুক্ষ হয়ে যায়। থানকুনি পাতার রস মৃতকোষগুলিকে পুনর্গঠন করে ত্বক মসৃণ করে দেয়।
৬. পুরনো ক্ষত কোনও ওষুধেই না সারলে, থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে তার জল লাগালে সেরে যায়। সদ্য ক্ষতে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে, ক্ষত নিরাময় হয়ে যায়।
৭. থানকুনি পাতা চুল পড়া আটকে দেয়। এমনকি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।
৮. বয়স বাড়লেও, যৌবন ধরে রেখে দেয় থানকুনি পাতার রস। প্রতিদিন একগ্লাস দুধে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে, চেহারায় লাবণ্য চলে আসে। আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়।
৯. দাঁতের রোগ সারাতেও থানকুনির জুড়ি মেলা ভার। মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে বা দাঁতে ব্যথা করলে একটা বড় বাটিতে থানকুনি
পাতা সিদ্ধ করে, তারপর ছেঁকে নিয়ে সেই জল দিয়ে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায় চটজলদি।

Wednesday, March 9, 2016

এখন থেকে আপনার মোবাইল এসএমএসে চলবে টিভি, ফ্যান, ফ্রিজ, সেচ পাম্প (ইবি শিক্ষার্থীর আবিষ্কার)

বৈদ্যুতিক বাতি, ফ্যান, ফ্রিজ, এসি, সেচ পাম্পসহ সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স ও ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি এখন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে মোবাইলে এসএমএস করে। এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাবুল হাসান। তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার শ্যামপুরে, পিতার নাম মো: মওলা বকস। মাহাবুল বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। এই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খলিলুর রহমান স্যারের তত্ত্বাবধানে ছয় মাস গবেষণা করে এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করেছেন তিনি। এর দ্বারা যন্ত্রের কাছে না থেকেও একই সাথে একাধিক যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই যন্ত্রের সাথে একটি সিম কার্ড রয়েছে। ওই সিমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে পরিচালকের ইচ্ছা অনুযায়ী দিক নির্দেশনা লিখে এসএমএস পাঠালে যন্ত্রটি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে। ফ্যান অফ করতে চাইলে “অফ” লিখে এসএমএস করতে হবে। অনুরুপভাবে অন করতে চাইলে “অন” লিখে এসএমএস করলেই ফ্যান ঘুরতে থাকবে। এসএমএস পাঠানোর পর যন্ত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফিরতি এসএমএসে পরিচালককে ফলাফল জানাবে। অর্থাৎ অফ হলে ফিরতি এসএমএসে “ফ্যান অফ” হয়েছে বলে পরিচালককে জানাবে। আবিষ্কারক মাহাবুল হাসান বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম আমার দাদা শীতের সকালে ফসলের জমিতে পানি সেচ দিতে যেতেন। তখন থেকেই ভাবতাম সেচ মেশিনটা যদি বাড়িতে বসেই চালু-বন্ধ করা যেত। স্নাতক শেষ বর্ষের প্রজেক্টে আমি বিষয়টি নিয়ে কাজ করে সফলতা পেয়েছি। আবিষ্কৃত যন্ত্রটি নিয়ে প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন ইবি শিক্ষার্থী মাহাবুল। এর আগে একই বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম হোসেন রোবট আবিষ্কার করেছিলেন। মাহাবুলের তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর ড. খলিলুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা খুবই সম্ভাবনাময়ী। তবে দু:খজনক হলেও সত্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে গবেষণায় এক টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয় না। আবিষ্কারের নেশায় শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্দ্যোগে গবেষণা করছে। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা আবিষ্কার বিমুখ হয়ে পড়বে। আগামী দিনে আবিষ্কারের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।n.b:collected

> সপ্তাহে মাত্র একবার করুন এই কাজটি আর সুন্দরী থাকুন আজীবন

এই ব্যস্ত জীবনে কার এত সময় আছে ত্বকের যত্নে ব্যয় করার? কিন্তু তারপরও আমরা সবাই চাই ব্রণহীন, উজ্জ্বল, মসৃণ ও ফর্সা ত্বক। হ্যাঁ, আপনি চাইলেও কিন্তু পেতে পারেন তা। না, পার্লারে যেতে হবে না। কিনতে হবে না দামী দামী প্রসাধনীও। তাহলে উপায়?
খুবই সহজলভ্য উপাদানে তৈরি এই ফেসমাস্কটি সপ্তাহে মাত্র একবার ব্যবহার করুন, আর তাতেই আপনার ত্বকের সমস্ত সমস্যা দূরীভূত হয়ে সৌন্দর্য থাকবে অটুট। ত্বকের বাড়তি তেল কমে যাবে, ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডসের থাকবে না, কালো দাগছোপ মিলিয়ে যাবে, ত্বক হয়ে উঠবে নরম ও মসৃণ। যে কোন রকমের ত্বকে বা যে কোন বয়সের ত্বকেই কাজ করবে এই ফেসমাস্কটি। আর সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট। কী করবেন? চলুন জেনে নিই।
যা লাগবে
১ চা চামচ অলিভ অয়েল
১/২ চা চামচ খাঁটি মধু
১ চা চামচ বেকিং সোডা (বেকিং পাউডার নয়, সোডা। যে কোন সুপার শপে কিনতে পাবেন)

যা করবেন

  • -প্রথমে মুখ খুব ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন।
  • – এরপর সমস্ত উপাদান ভালো করে মিশিয়ে একটা মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।
  • -এই পেস্ট পরিষ্কার ত্বকে মাখুন। তারপর ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • -১০ মিনিট পর উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • -প্রত্যেক সপ্তাহে মাত্র একবার ব্যবহার করলেই আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল, সমস্যাবিহীন ও একেবারেই দাগছোপ মুক্ত।

কীভাবে কাজ করে?

এই মাস্কের মূল উপাদান মধু যা ত্বকে ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ দূর করার মাধ্যমে ব্রণ কমায়। এছাড়াও রোমকূপ সংকুচিত করে ফলে ব্ল্যাক হেডসের সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও মধু ত্বককে টানটান ও সজীব করে তোলে। এছাড়াও এতে আছে অলিভ অয়েল যা ত্বককে পুষ্টি যোগায়। আছে বেকিং সোডা, যা ত্বকের মরা কোষ কয়েক মিনিটের মাঝেই দূর করে দেয় এবং ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।N.B:COLLECTED

১২ টাকার ওষুধে ডায়াবেটিস নির্মূল

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এমন ওষুধ তৈরি করছে ডেনমার্কের কোম্পানি নভো নরডিস্ক। তবে রোগের ধরনের ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ধরনের ওষুধও তৈরি করছে কোম্পানিটি।বুধবার ডেইলি স্টার ভবনে নভো নরডিস্ক আয়োজিত ‘করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি থ্রো ট্রিপল বোটম লাইন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নভো নরডিস্ক কোম্পানির ভাইস পেসিডেন্ট শুসানি স্টোরমার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘রোগের ওপর নির্ভর করে আমরা ১২ টাকা থেকে ২ হাজার ৪৯০ টাকা পর্রন্ত মূল্যের ডায়াবেটিস ওষুধ বাংলাদেশে বাজারজাত করছি। আমরা শুধু ব্যবসা করছি না, মানবসেবাও করছি। ব্যবসায় ক্ষেত্রে আমরা অর্থনৈতিক ,সামাজিক ও পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেই। ফলে আমাদের কোম্পানিটি ব্যবসায় দীর্ঘ মেয়াদি সফলতা পাচ্ছে। ব্যবসার জন্য এ তিনটি জিনিস খুবই জরুরি। আমরা বিশ্বাস করি ব্যবসার ক্ষেত্রে এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিলে দীর্ঘ মেয়াদে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। আর এ কারনে একাধিক টেকসই কোম্পানিগুলোর মধ্যে আমাদের কোম্পানিটি অন্যতম। আমরা সব ধরনের ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য ওষুধ তৈরি করি।’


তিনি জানান, আগামী এপ্রিলে রাইজুডেগ নামে আধুনিক ইনসুলিন বাংলাদেশে বাজারজাত শুরু করবে নভো নরডিস্ক। এটি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রাখা হবে।
উল্লেখ্য, প্রতি ৭ সেকেন্ডে বিশ্বে এক জন ডায়াবেটিস রোগী মারা যায়। বাংলাদেশে ২০১৪ সালে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৯ লাখ। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্যমতে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এমন রোগীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হবে। বিশ্বে বর্তমানে ৩৮৭ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এই সংখ্যা বেড়ে ২০৩৫ সালের ৫৯২ মিলিয়নে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন।
অলস জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে শহরে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ জন্য গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের ডায়াবেটিস বেশি হয়।
প্রসঙ্গত, নভো নরডিস্ক ৯০ বছর ধরে ডায়াবেটিস রোগীদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও কোম্পানিটিতে বিশ্বের ৭৫টি দেশে ৪১ হাজার ৪৫০ জন ‍লোক কাজ করছে। এছাড়া ১৮০টি দেশে কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত হচ্ছে।n.b: collected.

Friday, February 12, 2016

> কিডনি নস্ট হবার লক্ষণগুলো কী কী


কিডনির প্রাথমিক রোগে বা অন্য কোনো কারণে কিডনি আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর ধরে যদি দুটো কিডনিরই কার্যকারিতা নষ্ট হতে থাকে তখন তাকে ক্রনিক বা ধীরগতিতে কিডনি ফেইলুর (Kidney Failure) বলা হয়। একটি কিডনি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলে এবং অপরটির কার্যকারিতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলেও সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব। দুটো কিডনিরই শতকরা ৫০ ভাগ বিনষ্ট হলেও শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে, যার ফলে একজন সুস্থ মানুষ (কিডনি ডোনার – Kidney Donor) তার নিকট আত্মীয় বা অন্য আর একজন কিডনি বিকল রোগীকে (কিডনি গ্রহণকারী) একটি কিডনি দান করেও সুস্থ থাকেন, স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন। কেবল দুটো কিডনির ৫০ ভাগের উপর নষ্ট হলেই কিডনি বিকল হওয়ার প্রবণতা শুরু হয় এবং ৭৫ ভাগ নষ্ট হলেই শরীরের লক্ষণগুলো ধরা যেতে পারে আর ৯৫ ভাগের উপর নষ্ট হলে কৃত্রিম উপায়ে (ডায়ালাইসিস বা কিডনি সংযোজন) ছাড়া রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না, যাকে বলে এন্ড স্টেজ রেলাল ফেইল্যুর (End Stage Renal Failure)।
Kidney Fail

কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ

১. গ্লোমেরুলো নেফ্রাইটিস বা কিডনির ছাকনি প্রদাহ রোগ ৫০-৫৫%।
২. ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগ ১৫-২০%।
৩. উচ্চ রক্তচাপজনিত কিডনি রোগ ১০-১৫%।
৪. কিডনি বা প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর ও অন্য কোনো কারণে বাধাজনিত রোগ ৭-১৯%।
৫. কিডনি বা প্রস্রাবের রাস্তায় জীবাণুজনিত রোগ ৫-৭%।
৬. বংশানুক্রমিক কিডনি রোগ ৩-৫%।
৭. ওষুধজনিত কিডনি রোগ ৩-৫%।
৮. অন্যান্য ও অজানা।

কিডনি নস্ট হবার উপসর্গ

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুটো কিডনির শতকরা পঁচাত্তর ভাগ কার্যকারিতা নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত কিডনি বিকলের উপসর্গ দেখা যায় না। রোগী প্রাথমিক পর্যায়ে সামান্য ধরনের কিডনি রোগ থাকার দরুন গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে না। শতকরা ৭৫ ভাগের উপর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে রোগীর ক্ষুধা মন্দা, আহারে অনীহা, বমি বমি ভাগ, বমি হওয়া, শরীর ক্রমান্বয়ে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়। এছাড়াও প্রস্রাবের পরিমাণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, রাতে প্রস্রাব করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। কোনো রকম চর্মরোগের উপসর্গ ছাড়াই শরীর চুলকায়, যখন তখন হেচকি ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে খিঁচুনি হতে পারে। রোগী শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট, তীব্র গতিতে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, ঝিমানো ভাব, এমনকি এক পর্যায়ে রোগী জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারে।
রোগীকে পরীক্ষা করে রক্তের স্বল্পতা বোঝা যায়। অধিকাংশ রোগীর উচ্চরক্তচাপ (Hypertention) ধরা পড়ে। এছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর কারণ সাপেক্ষে শরীরে পানি দেখা যেতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে চামড়া শুকিয়ে যেতে পারে। কিছু কিছু রোগীর হৃিপণ্ডের আবরণে পানি এবং হার্ট ফেইলুরের চিহ্ন দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে শরীরের এমন কি হাত-পায়ের মাংসপেশী শুকিয়ে যায় যার দরুন রোগী সাধারণত চলাফেরার শক্তি হারিয়ে ফেলে।

কিডনি নস্ট রোগ নির্ণয়

ক্রনিক রেনাল ফেইলুর (Chronic Renal Failure) রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর উপসর্গের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াও প্রাথমিকভাবে রক্তের ইউরিয়া (Serum Urea), ক্রিয়েটেনিন (Serum Creatinin) এবং ইলেকট্রোলাইট (Electrolyres)পরীক্ষা করা হয়। কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তের ইউরিয়া, ক্রিয়েটেনিন বেড়ে যায়। পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়তে থাকে ও বাইকার্বোনেট কমে যায়। এছাড়াও ফসফেট শরীরে জমতে শুরু করে, যার ফলে ক্যালসিয়াম কমে যেতে বাধ্য হয় এবং অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও শুরু হতে থাকে। এরপরে কি কারণে ধীরগতিতে কিডনি বিকল হয়েছে তা বের করার জন্য প্রস্রাব পরীক্ষা করে এ্যালবুমিন (Albumin) আছে কিনা তা দেখা হয় এবং লোহিত ও শ্বেত কণিকা আছে কিনা তাও দেখে নেয়া হয়। প্রয়োজনের ২৪ ঘণ্টার প্রস্রাবের প্রোটিনের পরিমাণও দেখা হয়। প্রস্রাবে এ্যালবুমিন ২৪ ঘণ্টায় এক গ্রামের বেশি হলে প্রাথমিকভাবে কিডনি ফেইলুরের কারণ হিসেবে গ্লোমারুলোনেফ্রাইটিস ধরে নেয়া হয়।
কিডনির গঠন প্রণালী দেখার জন্য আলট্রাসনোগ্রাম এবং পেটের প্লেইন এক্স-রে করা হয়ে থাকে। কিডনির কার্যকারিতা শেষ পর্যায়ে গেলে দুটো কিডনির আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হয়ে যায়। যার কারণ গ্রোমারুলোনেফ্রাইটিস বা জীবাণুজনিত বলে মনে করা হয়। কিডনির আকৃতি ছোট না হয়ে যদি বড় হয়ে যায় এবং ভেতরের ক্যালিসেস বা শাখা-প্রশাখা নালীসমূহ ফুলে যায় তাহলে অবস্ট্রাকটিভ ইউরোপ্যাথিকে কিডনি বিকলের কারণ হিসেবে ধরা হয়। দুটো কিডনিতে যদি অনেকগুলো সিস্ট থাকে তাহলে বংশানুক্রমিক কিডনি রোগ বা পলিসিসটিক কিডনি ডিজিজ (Polycystic Kidney Disease) ভাবা হয়। এছাড়া পাথরজনিত কারণে বা প্রোস্টেটজনিত জটিলতায় কিডনি বিকল হলো কিনা তাও আলট্রাসনোগ্রাম ও এক্স-রের মাধ্যমে ধরা যেতে পারে।
উল্লিখিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াও কিডনি বিকল রোগীদের হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস, সি-ভাইরাস, এইডস (AIDS) ভাইরাস আছে কিনা তাও দেখা প্রয়োজন। বুকের এক্স-রে, ইসিজি রক্তের হিমোগ্লোবিন, ব্লাড গ্রুপ, এইচএলএ টিস্যু এন্টিজেন এসব পরীক্ষাও বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়।

কিডনি নস্ট হবার চিকিত্সা ও প্রতিকার

কিডনি অকেজো রোগীর চিকিত্সা নির্ভর করে কি কারণে এবং কত পরিমাণে কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হয়েছে তার উপর। কেননা এমন অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোকে আমরা সঠিক চিকিত্সার মাধ্যমে ভালো করে দিতে পারি, যেমন বাধাজনিত কিডনি রোগ। আবার কিছু কারণ আছে ভালো করা না গেলেও কিডনি আরো বেশি অকেজো না হয়ে যায় তার ব্যবস্থা নিতে পারি, যেমন উচ্চরক্তচাপ। অবশ্য যে কোনো কারণেই হোক না কেন দুটো কিডনির শতকরা ৯৫ ভাগের উপরে যদি নষ্ট হয়ে যায় তখন কোনোভাবেই কিডনির কার্যকারিতা ফেরানো সম্ভব হয় না। আর এসব ক্ষেত্রেই প্রয়োজন পড়ে ডায়ালাইসিস বা কিডনি সংযোজনের মাধ্যমে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা। উল্লেখিত দু ধরনের চিকিত্সাই অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্যই প্রয়োজন সঠিক সময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের মাধ্যমে কিডনি রোগের চিকিত্সা করানো। এর জন্য প্রয়োজন কিডনি রোগ সম্পর্কে সমাজ সচেতনতা, প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা ও চিকিত্সা সেবার মান বৃদ্ধি করা। কেননা প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কিডনি রোগী কিডনি অকেজো হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। এদের বাঁচাবার জন্য চাই চিকিত্সার সুযোগ-সুবিধা।
শুধু সরকারি পর্যায়ে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্ভব নয়। তাই এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি উদ্যোক্তাকে ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিবর্গকে। তৈরি করতে হবে অত্যাধুনিক ডায়ালাইসিস এবং কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা। আর কিডনি সংযোজনের জন্য নিকট আত্মীয়দের মধ্য থেকে ডোনার হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা দুটো সুস্থ কিডনির মধ্যে একটা নিকট অসুস্থ কিডনি রোগীকে দান করলেও স্বাভাবিক সুস্থ জীবন-যাপন করা যায় এবং সেক্ষেত্রে সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পায়। তাহলেই হাজার হাজার কিডনি বিকল রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

> Liver পরিষ্কার রাখতে যা খাবেন

Liver আমাদের দেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ এবং আমাদের স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা সৃষ্টি না হলে আমরা একে নিয়ে কোন চিন্তাই করিনা। Liver প্রায়ই আমাদের শরীরের দ্বাররক্ষী হিসেবে কাজ করে। একজন হাউজ কিপারের মতোই আমাদের শরীরে যা কিছু ঢুকছে তা পরিষ্কার করা এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সহযোগিতা করে লিভার। আমাদেরকে সুস্থ রাখার জন্য কাজ করে যে লিভার তাকে সুস্থ রাখাটা প্রয়োজনীয়। আসুন তাহলে জেনে নেই এমন কিছু খাবারের কথা, যেগুলো খেলে লিভার সুস্থ থাকার পাশাপাশি আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্য ও ভালো থাকবে।

Liver পরিষ্কার রাখতে যা খাবেন

 
Liver Cleanse
Liver Cleanse 

রসুন
রসুন অত্যন্ত কার্যকরী লিভার পরিষ্কারক যার মধ্যে প্রচুর এনজাইম থাকে এবং এই এনজাইম লিভার থেকে টক্সিন বাহির হতে সাহায্য। এছাড়াও রসুনে সেলেনিয়াম ও এলিসিন নামক উপাদান থাকে এবং এরাও লিভার থেকে টক্সিন বাহির হতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।                         
 
জাম্বুরা
জাম্বুরাতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা লিভারের ন্যাচারাল ক্লিঞ্জিং প্রসেসকে বৃদ্ধি করে। ছোট সাইজের এক গ্লাস জাম্বুরার জুস লিভারের ডিটক্সিফিকেশন এনজাইমের উৎপাদন বৃদ্ধি করে যা কার্সিনোজেন এবং অন্যান্য টক্সিনকে পরিপূর্ণ ভাবে বাহির হয়ে যেতে সাহায্য করে।
বিট ও গাজর
গাজর গ্লুটাথায়ন নামক প্রোটিনে সমৃদ্ধ যা লিভারকে বিষ মুক্ত হতে সাহায্য করে। গাজর ও বিট উভয়ের মধ্যেই উচ্চমাত্রার উদ্ভিজ ফ্লেভনয়েড ও বিটা ক্যারোটিন থাকে। বিট ও গাজর খেলে লিভারের কার্যকারিতা উদ্দীপিত হয় এবং লিভারের সার্বিক কাজের জন্য উপকারি।    
 
গ্রিনটি (Green Tea)
গ্রিনটি হচ্ছে লিভার লাভিং বেভারেজ বা যকৃৎ প্রেমী পানীয়। গ্রিনটি উদ্ভিজ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যাটেচিন সমৃদ্ধ যা লিভারের কাজে সহযোগিতা করে। সুপেয় গ্রিনটি সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারি।
 
সবুজ শাক সবজি
সবুজ শাক সবজি শক্তিশালী লিভার পরিষ্কারক। সবুজ শাক সবজি কাঁচা, রান্না করে বা জুস হিসেবে খাওয়া যায়। সবুজ শাক সবজিতে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রার ক্লোরোফিল থাকে এবং এরা রক্ত প্রবাহ থেকে পরিবেশগত বিষ শোষণ করে নেয়। সবুজ শাক সবজির সহজাত প্রবণতা আছে ভারী ধাতু, রাসায়নিক ও কীটনাশককে নিস্ক্রিয় করার। সবুজ শাক সবজি লিভারের জন্য শক্তিশালী প্রতিরক্ষা প্রদান করে।      
 
এছাড়াও আপেল, অ্যাভোকাডো, ওলিভ অয়েল, লেবু, হলুদ, আখরোট, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, মিষ্টি আলু, ব্রোকলি, টম্যাটো ইত্যাদি খাবার নিয়মিত খেলে লিভার পরিষ্কার থাকবে।

> গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি

 গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি

একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়, ‘আমার স্ত্রীতো অসুস্থ’ বা অমুক ভাবী, খালা অসুস্থ’। কেন, কী হয়েছে, কেন জানেন না, উনার তো বাচ্চা হবে। মেয়ে মাত্ররই তো মা হবে, এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। এটা তো আর ৫-১০টা রোগের মতো অসুস্থতা নয়। বাচ্চা হওয়াটা শরীরের একটা অবস্থা মাত্র। এটা কোন রোগ নয়। কাজেই প্রথম থেকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা উচিত এই ভাবনা।
 
Pregnancy Care Advice

এজন্যই চিকিত্সকগণ বলেন, মা হওয়ার আগে শারীরিক-মানসিক প্রস্তুতির বিশেষ প্রয়োজন আছে।  প্রাপ্ত বয়স্ক একজন নারী যখন মানসিকভাবে প্রস্তুত হবেন মা হওয়ার জন্য তখনই তার সন্তানধারণ করা উচিত। তার আগে নয়। কাজেই সন্তান ধারণের আগে একজন মায়ের যেমন প্রস্তুতি আছে, তেমনি পরিবারের আর সবারও আছে। নিচে গর্ভকালীন কিছু জটিলতার কথা উল্লেখ করা হলো। নূন্যতম প্রস্তুতি এবং সচেতনতা থাকলেও এগুলো মোকাবিলা করা তেমন কোন সমস্যা নয়। তবে জানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-
  • রক্ত স্বল্পতা, জন্ডিস, খিঁচুনি, পা ফুলে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত বমি হওয়া, পেটে ব্যথা, বিশেষ করে তলপেটে ও শ্বাসকষ্ট হওয়া।
  • প্রায়ই জবর হওয়া
  • ডায়াবেটিস ধরা পড়া বা রক্তে সুগার পাওয়া
  • প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া হওয়া
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • দিন যাচ্ছে কিন্তু তলপেটের আকার বাড়ছে না
  • যোনিপথে রক্ত ক্ষরণ, রক্তস্রাব, দুরগন্ধযুক্ত স্রাব
  • জরায়ুর ভিতরে সন্তানে চড়াচড়া অনুভব করতে না পারা।
উপরোক্ত এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে কোন রকম চিন্তা না করে চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী।

কি কি কারণে গর্ভধারণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে

আগেই বলেছি মা হওয়ার জন্য বয়সটা খুব জরুরি।
  • ১৮ বছর বয়স না হতেই গর্ভধারণ
  • ৩০ বছরের পর প্রথম সন্তান নেয়া
  • ৪০ বছরের পর সন্তান ধারণ
  • চতুর্থ সন্তানের পর আবারও সন্তান ধারণ
  • আগের গর্ভের সময় জটিলতা হওয়া
  • অস্ত্রোপচারের পর নির্দিষ্ট সময় পার না হতেই আবার গর্ভধারণ করা।
  • মেয়েদের উচ্চতা, তুলনামূলক বেঁটে বা খাটো মেয়েদের গর্ভধারণ
  • রক্তস্বল্পতা ও যমজ সন্তান ধারণ।
গর্ভাবস্থায় প্রিএক্লামশিয়া (Pre Eclampsia)
 
এটি একটি অন্যতম জটিলতা। এক্ষেত্রে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, প্রস্রাবে প্রোটিন, উপরের পেটে ব্যথা, বমি হওয়া, মাথা ব্যথা ইত্যাদি দৃশ্যত বেশ কিছু জটিলতা এসময় তৈরি হয়। গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার কিছু সমস্যা এবং রক্ত সরবরাহের ঘাটতির কারণে দেখা দেয় এই এক্লামশিয়া। এগুলে া সাধারণত: হয় তখনই যখন আপনি প্রথম বারের মত মা হচ্ছেন, আপনার ওজন বেশি, বয়স ৪০ এর বেশি, আপনার উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অথবা কিডনির সমস্যা আছে। আপনার পরিবারের অন্য কারো এক্লামশিয়া ছিলো অথবা আপনি বহুবার অন্তসত্মা হয়েছেন।
 
গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা সমস্যা
 
সাধারণত: এর কোন লক্ষণ দেখা যায় না। একমাত্র স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমেই এটা ডায়াগনসিস করা সম্ভব হয়। তবে যোনিপথে রক্তক্ষরণ হলে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। গর্ভফুল সাধারণত আংশিক বা পুরোপুরি ঢেকে ফেলে জরায়ুর মুখকে। প্রস্রব ব্যথা শুরুর পর জরায়ুর মুখ যখন খুলে যায়, তখন গর্ভফুল ক্রমেই সরে আসতে থাকে গর্ভাশয়ের দেয়াল থেকে। এসময়টা তাদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যারা অধিক সন্তান জন্ম দিয়েছেন, জরায়ুতে এর আগে অপারেশন করা হয়েছে অথবা আগের সন্তান যদি সিজারিয়ান-এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।
 
গর্ভাবস্থায় রিলাক্সিন হরমোন জয়েনগুলোকে অনেকটাই শিথিল করে দেয়। কিন্তু এটা যদি বেশি পরিমাণে হয়, তখন তা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন-কোমরের জয়েন্টের ওপরে ব্যথা, পিউবিক হাড় এবং পিঠের নিচে ব্যথা হতে পারে এ কারণে। গর্ভাবস্থায় যে কোনো সময়ে এটি হতে পারে। তবে প্রথম তিন মাসের পর এটি হতে দেখা যায়।
 
গর্ভাবস্থায় চুলকানি
 
অনেকের গর্ভাবস্থায় হাতে-পায়ে  হতে পারে। এটা সাধারণত যকৃতের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। এটা যে কারও হতে পারে। তবে পরিবারের মা বা বোনের এরকম ইতিহাস থাকলে এটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
 
গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন
 
এটি একটি অন্যতম বিবেচ্য বিষয়। নির্দিষ্ট অনুপাতে ওজন না বাড়া হচ্ছে সন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হওয়া বা মায়ের সঠিক পুষ্টির অভাব। এর মানে মাকে প্রয়োজনীয় খাবারগুলো সুষম খাবার খাওয়া একান্ত আবশ্যক। একজন নারীর স্বাভাবিক অবস্থায় যে পরিমাণ সুষম খাবার প্রয়োজন, সেই তিনিই যখন সন্তান ধারণ করেন তখন তার চাহিদা আরও বেড়ে যায়। প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রেই খাবারটা খুবই জরুরি।
গর্ভবতী নারীর অতিরিক্ত খাবার প্রয়োজন হয় প্রধানত: দুটি কারণে।
এক-নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে, অর্থ্যাত্ আসন্ন সন্তান প্রসবের জন্য নিজেকে তৈরি করতে।
দুই-গর্ভস্থ ভ্রুণের গঠন ও বৃদ্ধি ঠিক রাখতে।
মা যদি খাবার কম খান তাহলে সন্তানের ওজনও বাড়বে না, প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে। শেষ পর্যন্ত একটি অপরিণত শিশুর জন্ম হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, যেকোন জটিলতা এড়াতে নিয়মিত চিকিত্সকের কাছে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। যেকোন কিছুই হোক না কেন, তা চেক-আপে ধরা পড়বেই। আর তাহলে চিকিত্সাও সম্ভব হবে। আর রোগীর মনকেও অনেকখানি প্রশান্তি দেওয়া সম্ভব হবে। সুতরাং একটি সুস্থ-সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে মায়েদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
n.b-(c.d)

তৈলাক্ত খাবার হৃদরোগের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ : দেবি শেঠি !!

তৈলাক্ত খাবার হৃদরোগের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ : দেবি শেঠি !!
.
পোষ্ট টি মন দিয়ে পড়বেন আপনারই উপকার হবে
আর পোষ্ট টি শেয়ার করে অন্যদের কে উপকার করবেন ।
দেবি শেঠি ভারতের বিখ্যাত চিকিৎসক। বলা হয়, বিশ্বের সেরা ১০ জন সার্জনের একজন তিনি।বাংলাদেশেও তিনি বেশ পরিচিত। ভারতের কর্নাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালোর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে শেঠির নারায়ণা হৃদয়ালয় হাসপাতালটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান হাসপাতাল।
প্রশ্ন: হৃদরোগ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নয় এমন মানুষেরা কিভাবে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিতে পারে?
দেবি শেঠি: ১. খাবারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শর্করা এবং চর্বিজাত খাবার কম খেতে হবে। আর আমিষের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
২. সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন আধা ঘণ্টা করে হাঁটতে হবে। লিফটে চড়া এড়াতে হবে। একটানা বেশি সময় বসে থাকা যাবে না।
৩. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৫. রক্তচাপ এবং সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
প্রশ্ন: শাক জাতীয় নয়, এমন খাবার (যেমন মাছ) খাওয়া কি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: মাঝে মাঝে শোনা যায় সুস্থ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখেন?
দেবি শেঠি: এটাকে বলে নীরব আক্রমণ। এজন্যই ত্রিশোর্ধ্ব সকলের উচিত নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।
প্রশ্ন: মানুষ কি উত্তরাধিকারসূত্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে কেন? এর থেকে উত্তরণের উপায় কি?
দেবি শেঠি: জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। জীবনে সব কিছু নিখুঁত হবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।
প্রশ্ন: জগিং করার চেয়ে কি হাঁটা ভারেঅ? নাকি হৃদযন্ত্রের যত্ন নেয়ার জন্য আরো কঠিন ব্যায়াম জরুরি?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ, জগিং করার চেয়ে হাঁটা ভালো। জগিং করলে মানুষ দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায় এবং জয়েন্টে ব্যথা হয়।
প্রশ্ন: দরিদ্র এবং অভাবগ্রস্তদের জন্য আপনি অনেক কিছু করেছেন। এসবের পেছনে অনুপ্রেরণা কি ছিল?
দেবি শেঠি: মাদার তেরেসা। তিনি আমার রোগী ছিলেন।
প্রশ্ন: নিম্ন রক্তচাপে যারা ভোগেন, তারা কি হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে?
দেবি শেঠি: সেটা হবে খুবই বিরল।
প্রশ্ন: কোলেস্টেরলের মাত্রা কি অল্প বয়স থেকেই বাড়তে থাকে? নাকি ত্রিশের পর এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়া উচিত?
দেবি শেঠি: না, কোলেস্টেরলের মাত্রা ছোটবেলা থেকেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
প্রশ্ন: অনিয়মিত খাদ্যাভাস কিভাবে হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে?
দেবি শেঠি: অনিয়মিত খাদ্যাভাস মানুষকে জাঙ্ক ফুডের দিকে ঠেলে দেয়। আর তখনই হজমের জন্য ব্যবহৃত এনজাইমগুলো দ্বিধায় পড়ে যায়।
প্রশ্ন: ওষুধ ছাড়া কিভাবে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
দেবি শেঠি: নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রের জন্য সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে খারাপ খাবার কোনটি?
দেবি শেঠি: ফল এবং সবজি সবচেয়ে ভাল খাবার। আর সবচেয়ে খারাপ তৈলাক্ত খাবার।
প্রশ্ন: কোন তেল ভালো? সূর্যমুখী নাকি জলপাই?
দেবি শেঠি: যেকোনো তেলই খারাপ।
প্রশ্ন: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কি নির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষা আছে?
দেবি শেঠি: নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুগার এবং কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। তাছাড়া রক্তচাপ পরিমাপও জরুরি।
প্রশ্ন: হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাথমিকভাবে কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে?
দেবি শেঠি: রোগীকে প্রথমে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর জিহ্বার নিচে একটি এ্যাসপিরিন ট্যাবলেট রাখতে হবে। যদি পাওয়া যায় তবে এ্যাসপিরিনের পাশাপাশি একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেটও রাখতে হবে। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নেবার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।
প্রশ্ন: হৃদরোগজনিত ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার মধ্যে পার্থক্য করা যায় কিভাবে?
দেবি শেঠি: ইসিজি ছাড়া এটা সত্যিই খুব কঠিন।
প্রশ্ন: যুবকদের মধ্যে হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যার আধিক্যের কারণ কি?
দেবি শেঠি: একটানা দীর্ঘ সময় বসে থাকা, ধূমপান এবং জাঙ্ক ফুড। তাছাড়া ব্যায়াম না করাও একটি প্রধান কারণ। কিছু কিছু দেশের মানুষের জেনেটিক কারণেই ইউরোপিয়ান এবং আমেরিকানদের চেয়ে তিন গুণ বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
প্রশ্ন: রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা (১২০/৮০) না থাকলেও কি কেউ পুরোপুরি সুস্থ থাকতে পারে?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে করলে সন্তানের হৃদরোগ হতে পারে- এটা কি সত্য?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ। নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে জন্মগত অস্বাভাবিকতার দিকে ঠেলে দেয়।
প্রশ্ন: বেশিরভাগ মানুষ অনিয়ন্ত্রিত রুটিন অনুসরণ করে। মাঝে মাঝে মানুষকে অনেক রাত পর্যন্ত অফিসে থাকতে হয়। এতে কি হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হয়? যদি হয় তবে এক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?
দেবি শেঠি: তরুণ বয়সে প্রকৃতি মানুষকে এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন: অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধ গ্রহণ করলে অন্য কোন জটিলতা তৈরি হয়?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ, বেশিরভাগ ওষুধেরই কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। কিন্তু আধুনিক অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধগুলো অনেক নিরাপদ।
প্রশ্ন: অতিরিক্ত চা বা কফি খেলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: অ্যাজমা রোগীদের কি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: জাঙ্ক ফুডকে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন?
দেবি শেঠি: যেকোনো ধরনের ফ্রাইড ফুড যেমন কেন্টাকি, ম্যাকডোনাল্ডস, সমুচা। এমনকি মাসালা দোসাও জাঙ্ক ফুড।
প্রশ্ন: আপনার মতে ভারতীয়দের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তিন গুণ বেশি। এর কারণ কি?
দেবি শেঠি: পৃথিবীর প্রতিটি জাতিরই কিছু নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, জাতি হিসেবে ভারতীয়দের সবচেয়ে ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি।
প্রশ্ন: কলা খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: হার্ট অ্যাটাক হলে কেউ কি নিজে নিজে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে পারে?
দেবি শেঠি: অবশ্যই। তাকে প্রথমেই শুতে হবে এবং একটি এ্যাসপিরিন ট্যাবলেট জিহবার নিচে রাখতে হবে। এরপর দ্রুত আশপাশের কাউকে বলতে হবে যেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি মনে করি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করা ঠিক নয়। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাম্বুলেন্স যথাসময়ে হাজির হয় না।
প্রশ্ন: রক্তে শ্বেতকণিকা এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে কি হৃদরোগ হতে পারে?
দেবি শেঠি: না। কিন্তু নিয়মিত ব্যায়াম করার জন্য হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকা জরুরি।
প্রশ্ন: আমাদের ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে অনেক সময় ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ঘরের স্বাভাবিক কাজের সময় হাঁটাহাঁটি করা অথবা সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা কি ব্যায়ামের বিকল্প হতে পারে?
দেবি শেঠি: অবশ্যই। একটানা আধা ঘণ্টার বেশি বসে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। এমনকি এক চেয়ার থেকে উঠে অন্য চেয়ারে যেয়ে বসাও শরীরের জন্য অনেকটা সহায়ক।
প্রশ্ন: হৃদরোগ এবং রক্তে সুগারের পরিমাণের সাথে কি কোনো সম্পর্ক আছে?
দেবি শেঠি: বেশ গভীর সম্পর্ক আছে। ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?
দেবি শেঠি: পরিমিত খাদ্যাভাস, ব্যায়াম, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। পাশাপাশি রক্তচাপ এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
প্রশ্ন: যারা রাতের শিফটে কাজ করেন তাদের কি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: আধুনিক অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধগু কোনগুলো?
দেবি শেঠি: অনেক ওষুধই আছে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। তবে আমার পরামর্শ হলো, ওষুধ এড়িয়ে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা। আর সেজন্য নিয়মিত হাঁটা, ওজন কমে এমন খাবার খাওয়া এবং জীবনযাত্রার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি।
প্রশ্ন: ডিসপিরিন বা এই ধরনের মাথাব্যথা উপশমকারী ট্যাবলেট কি হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা কেন হৃদরোগে বেশি আক্রান্ত হয়?
দেবি শেঠি: প্রকৃতি মেয়েদেরকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার উপায় কি?
দেবি শেঠি: স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। জাঙ্ক ফুড ও ধূমপান পরিহার করতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে। আর বয়স ত্রিশ পার হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। অন্তত প্রতি ছয় মাসে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতেই হবে।
(ফেসবুক বন্ধুদের জন্যে বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: দেবি শেঠি’র এই পরামর্শ আশা করি সকলের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান মনে হবে। উপকৃতও হবেন অনেকেই। এই কথপোকথন কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না আশা করি! N.B-(c.d)

Wednesday, September 23, 2015

সারা দেশে স্থাপিত হবে এক লাখ ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট


সারা দেশে স্থাপিত হবে এক লাখ ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট
নাটোর, ২৪ সেপ্টেম্বর- আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশে এক লাখ ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দরিদ্র ও মেধাবী তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ করে দিতেই এই ব্যবস্থা করা হবে জানান তিনি।
আজ বুধবার নাটোরের সিংড়া প্রেসক্লাবের কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে আলোচনায় এ কথা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, "মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার বাইরে যদি আর কোন চাহিদা থাকে, তাহলে সেটি হচ্ছে ইন্টারনেট।" এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করতে না পারলে মানুষ কোনমতেই তার পাঁচটি মৌলিক চাহিদার সুফল ভোগ করতে পারবে না।"
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, "সাংবাদিকদের এমন সাংবাদিকতা করতে হবে যার মাধ্যমে দেশের সকল মানুষকে সংযুক্ত করতে হবে। নতুবা কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়। সাংবাদিকরা অনেকটা বিনা পারিশ্রমিকে দেশের জনগনের স্বার্থে কাজ করে। তাই বর্তমান সরকার তৃণমুল পর্যায়ের সাংবাদিকদের ট্রেনিংয়ের আওতায় আনার ব্যবস্থা করছে। যাতে করে তারা ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে উপার্জন করতে পারে।"

Tuesday, September 15, 2015

ফেসবুকে যুক্ত হচ্ছে ‘ডিজলাইক’ বাটন


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যে কোনো ধরণের ‘লাইক’ বাটনের পাশাপাশি ‘ডিজলাইক’ বাটনেরও দাবি জানিয়ে আসছিলেন ফেসবুকপ্রেমীরা। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে।
ফেসবুকে খুব শিগগিরই ‘ডিজলাইক’ বাটন যুক্ত হতে চলেছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান মার্ক জাকারবার্গ।
মঙ্গলবার ফেসবুক সদর দপ্তরে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ ঘোষণা দেন।
জাকারবার্গ বলেন, আমার মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরেই ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ‘ডিজলাইক’ বাটনের দাবি জানিয়ে আসছেন। আজ এই বিশেষ দিনে তাদের বলতে চাই, আমরা এটি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এর মাধ্যমে পছন্দের পাশাপাশি কারও অপছন্দের বিষয়টিও জানানোর সুযোগ থাকছে।
খুব শিগগিরই এটি ফেসবুকে যোগ করা হবে বলে জানান তিনি।c.d.

Monday, September 7, 2015

সবার সিম পুনঃনিবন্ধন করতে হবে না : বিটিআরসি


 সব সেলফোন গ্রাহককে সিম পুনঃনিবন্ধন করতে হবে না জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সোমবার সাংবাদিকদের জানান, প্রকৃত নিবন্ধনকৃত গ্রাহকদের মোবাইল পুনঃনিবন্ধন করতে হবে না।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কার্যালয়ে একটি সেমিনার শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

গতকাল রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও টেলিযোগাযোগ খাতের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এক বৈঠকে সিম নিবন্ধনের একটি নির্দেশনা আসে। যা নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। বলা হয়, সব সিম (প্রায় ১৩ কোটি) পুনঃনিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু যারা একবার সঠিকভাবে সিম নিবন্ধন করিয়েছেন তারা কেন আবার নিবন্ধন করবেন এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘গতকালের (রোববার) বৈঠকে আমিও ছিলাম। সেখানে বলা হয়েছে, অনিবন্ধিত সিম নিবন্ধন করতে হবে।’
সিম পুনঃনিবন্ধন একটা চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে সুনিল বলেন, ‘গত তিন মাস ধরে সিম পুনঃনিবন্ধন চলছে। এটি আগের নির্দেশনার ধারাবাহিকতা। যারা সঠিকভাবে নিবন্ধিত রয়েছে তাদের পুনরায় নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই।’
১৩ কোটি সিমের মধ্যে সবই ভুয়া সিম বলে আমি মনে করি না বলে মন্তব্য করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
তার মতে, খুচরা বিক্রেতা ও ডিস্ট্রিবিউটররা রেজিস্টেশন ছাড়াই অনেক সময় গ্রাহকের কাছে সিম বিক্রি করে। এ ধরনের গ্রাহকদের সিম পুনরায় নিবন্ধন করার পরামর্শ দেন তিনি। না হলে যাচাই করার সময় সে সব সিম বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
 
নিবন্ধনহীন সিম কবে নাগাদ বন্ধ হচ্ছে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট করে কিছু না বলে সুনিল বলেন, ‘এটি সময় সাপেক্ষ।(c.t)

বহুল প্রতীক্ষিত অষ্টম পে-স্কেল মন্ত্রিসভায় অনুমোদন


বহুল প্রতীক্ষিত অষ্টম পে-স্কেল মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় অষ্টম পে-স্কেলের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নতুন পে-স্কেল অনুমোদন দেওয়া হয়।
গত ১ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হিসেবে ধরা হবে।
এর আগে বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন জাতীয় বেতন স্কেলসহ অন্যান্য আলোচিত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে গত মাসে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরের শুরুতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের জন্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত নতুন বেতন কাঠামো উঠবে। অর্থমন্ত্রী জানান, নতুন বেতন কাঠামোর সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের বিষয়টিও বিবেচনা করা হতে পারে।

Sunday, September 6, 2015

How to Earn Money on YouTube

How to Earn Money on YouTube

You’ve probably heard stories about regular people earning money on YouTube and thought, “Hey, I can do this too!”. While earning thousands of dollars probably isn’t realistic, you can start earning money quickly, especially if you have a strong subscriber base. Follow this guide to get your videos monetized and start earning revenue off of those YouTube ads. It's easy!
Ad
EditSteps

    Earn Money on YouTube Step 1 Version 2.jpg
    1
    Set up and build your YouTube channel. Your channel is your personal presence on YouTube. Each YouTube account has one channel attached to it. A YouTube account is the same as a Google account, and creating a YouTube account will grant you access to other Google products, such as Gmail and Drive.
        Create your account or use your existing one. Add keywords to help people find your channel. You can add keywords by navigating to the Advanced section of your Channel Settings. Make sure that your keywords are relevant to your content.
        Your user name can also work for or against you. If it’s short, easy to remember, and original, people will be more apt to remember you. However if you are using an existing account, just stay with it. It doesn't help if you keep changing accounts.
    Earn Money on YouTube Step 2 Version 2.jpg
    2
    Add content. Try to upload content that is high quality, and isn't super long. (This option can vary depending on what type of content you decide to upload) Also try to upload regularly and stay consistent with your uploads.
        Even if your content isn't great at first, keep at it. Practice makes perfect. Try to make each video better than the last. You will often learn as you go.
        Improve your content by either using a better camera or trying better editing software or techniques. Also try to improve the way things are filmed. Use a tripod, have a friend help you or light your scenes better. It all helps for a better end product which in turn helps you get a better audience.
        By uploading regularly you can help hold an audience. People are more likely to subscribe if you add content on regular schedule, and maintain that schedule as much as possible.
        Make sure to tag your videos with key words that describe the content, as well as an eye-catching description. These will help drive people to your video from YouTube searches.
    Earn Money on YouTube Step 3 Version 2.jpg
    3
    Gain an audience. Building an audience is key to increasing your monetization. You need people to watch your ads in order to make any money off of them. There is no one secret to getting more subscribers, just make the best content that you can and they will come to you.
        Keep uploading content and try to get people hooked. Send your video out on Twitter and Facebook. Share it with people. Distribute it elsewhere on the internet. Subscribers are essential to becoming a partner.
        Interact with your viewers by responding to comments and making occasional videos directly related to viewer comments and questions. Connecting with your community will bring more members into that community.
    Earn Money on YouTube Step 4 Version 2.jpg
    4
    Monetize your videos. In order to start earning money on your videos, you’ll need to enable monetization. This means you are allowing YouTube to place ads in your video. This also means that you acknowledge that there is no copyrighted material in your video.
        You can monetize a video as it uploads by clicking the Monetization tab and checking the “Monetize with Ads” box.
        To monetize a video after it has been uploaded, open your Video Manager and click the “$” sign next to the video that you want to monetize. Check the “Monetize with Ads” box.
    Earn Money on YouTube Step 5 Version 2.jpg
    5
    Setup Google AdSense. You can setup Google AdSense for free at the AdSense website. Click the Sign Up Now button to begin creating your account. You must be 18 years or older to create your own account. If you are younger than that, you will need an adult to help you.
        You need either PayPal or a bank account and a valid mailing address as well as other information so AdSense can verify who you are and who to send the money to. You only gain money per ad click and a smaller amount per view but it adds up over time. This is why having an audience is key.
    Earn Money on YouTube Step 6 Version 2.jpg
    6
    Check your analytics. Once you have some videos online, monetized, and being viewed, you can check out the analytics on them to see how they are performing. Click the Analytics option in your Channel menu. Here you can view estimated earnings, ad performance, video views, demographics and more.
        Use these tools to see how your content is resonating with your audience. You can change your content or your marketing if you’re finding that you aren’t attracting the users that you want to.
    Earn Money on YouTube Step 7 Version 2.jpg
    7
    Market your videos elsewhere. Don't put your videos just on YouTube! Start a blog, make a website or post them on other video or social media sites. The more views it gets, the better. By sharing the link or embedding the video on the internet, you are increasing the chance of it getting noticed and of you making money.
    Earn Money on YouTube Step 8 Version 2.jpg
    8
    Become a YouTube partner. YouTube Partners are YouTube members who have monetized videos with a large number of viewers. Partners gain access to more content creation tools, and can win prizes for the number of viewers they have. Partners also get access to much more community support and tips.
        You can apply for YouTube partnership at any time through the YouTube Partner page. In order to gain access to the most powerful Partner programs, you need to have 15,000 cumulative watch hours for your channel over the last 90 days.(collected) 

Thursday, August 27, 2015

কাজী নজরুল ইসলাম


Nazrul.jpg
জন্মকাজী নজরুল ইসলাম
মে ২৫, ১৮৯৯
চুরুলিয়াবেঙ্গল প্রেসিডেন্সিব্রিটিশ রাজ (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ)
মৃত্যুআগস্ট ২৯, ১৯৭৬ (৭৭ বছর)
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
অন্য নামদুখু মিয়া[১]
বংশোদ্ভূতবাঙালি
নাগরিকত্ব
  • ব্রিটিশ ভারতীয় (১৮৯৯-১৯৪৭)
  • ভারতীয় (১৯৪৭-১৯৭৬)
পেশা
  • কবি
  •  
  • উপন্যাসিক
  •  
  • গীতিকার
  •  
  • সুরকার
  •  
  • নাট্যকার
কার্যকাল
উল্লেখযোগ্য কাজ
প্রভাবিত হয়েছেনইসলামহাফিজরুমিশাক্তধর্ম;রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রভাবিত করেছেনবাংলাদেশের সংস্কৃতিভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনভারতের সংস্কৃতি; ; বৈশ্বিক নাগরিকত্ব
রাজনৈতিক আন্দোলনবাংলার নবজাগরণ
দম্পতি
পিতা-মাতা
  • কাজী ফকির আহমদ (পিতা)
  • জাহেদা খাতুন (মাতা)
পুরস্কারস্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৭৭)
একুশে পদক (১৯৭৬)
পদ্মভূষণ
স্বাক্ষরSignature of Kazi Nazrul.jpg
কাজী নজরুল ইসলাম (উচ্চারণ: [kadʒi nodʒrul islam]মে ২৫১৮৯৯আগস্ট ২৯,১৯৭৬) (জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬–ভাদ্র ১২, ১৩৮৩বঙ্গাব্দ) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় অগ্রণী বাঙালি কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য।[১] বাঙালী মণীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন নজরুল। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম সাহিত্যিক, দেশপ্রেমী এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি। পশ্চিমবঙ্গ ওবাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ওগান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তাঁর কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে।অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে –- কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তাঁর জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
নজরুল এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়। স্থানীয় এক মসজিদে সম্মানিত মুয়াযযিনহিসেবে কাজও করেছিলেন। কৈশোরে বিভিন্নথিয়েটার দলের সাথে কাজ করতে যেয়ে তিনিকবিতানাটক এবং সাহিত্য সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান লাভ করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতেকিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এসময় তিনি কলকাতাতেই থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবংভাঙার গানের মত কবিতা; ধূমকেতুর মত সাময়িকী। জেলে বন্দী হলে পর লিখেনরাজবন্দীর জবানবন্দী, এই সব সাহিত্যকর্মেসাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হলইসলামী সঙ্গীত তথা গজল, এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামাসংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা "নজরুল গীতি" নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়। মধ্যবয়সে তিনি পিক্‌স ডিজিজে[২]আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন। এসময় তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়। এখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জীবনী

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪মে (জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬বঙ্গাব্দভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলারআসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম।[১]চুরুলিয়া গ্রামটি আসানসোল মহকুমারজামুরিয়া ব্লকে অবস্থিত। পিতামহ কাজী আমিন উল্লাহর পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। তার বাবা ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মাযারের খাদেম। নজরুলের তিন ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ কাজী আলী হোসেন এবং দুই বোনের মধ্যে সবার বড় কাজী সাহেবজান ও কনিষ্ঠ উম্মে কুলসুম। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল "দুখু মিয়া"। নজরুল গ্রামের স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেন। মক্তবে (মসজিদপরিচালিত মুসলিমদের ধর্মীয় স্কুল) কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯০৮ সালে তার পিতার মৃত্যু হয়, তখন তার বয়স মাত্র নয় বছর। পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তার শিক্ষাজীবন বাঁধাগ্রস্থ হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে তিনি জীবিকা অর্জ্জনের জন্য কাজে নামতে হয় তাকে।[৩]এসময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সাথে হাজী পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াযযিন (আযান দাতা) হিসেবে কাজ শুরু করেন। এইসব কাজের মাধ্যমে তিনি অল্প বয়সেই ইসলামের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান যা পরবর্তীকালে তার সাহিত্যকর্মে বিপুলভাবে প্রভাবিত ফেলে।[১] তিনিই বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার চর্চা শুরু করেছেন বলা যায়।[১]
মক্তব, মসজিদ ও মাজারের কাজে নজরুল বেশি দিন ছিলেন না। বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একটি লেটো(বাংলার রাঢ় অঞ্চলের কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক চর্চার ভ্রাম্যমান নাট্যদল)[৪] দলে যোগ দেন। তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লেটো দলের বিশিষ্ট ওস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দূ ভাষায় তার দখল ছিল। এছাড়া বজলে করিম মিশ্র ভাষায় গান রচনা করতেন। ধারণা করা হয়, বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল লেটো দলে যোগ দিয়েছিলেন। এছাড়া ঐ অঞ্চলের জনপ্রিয় লেটো কবি শেখ চকোর (গোদা কবি) এবং কবিয়া বাসুদেবের লেটো ও কবিগানের আসরে নজরুল নিয়মিত অংশ নিতেন। লেটো দলেই সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্য গান ও কবিতা লিখতেন। নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বাংলা এবংসংস্কৃত সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। একইসাথে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ পুরাণসমূহঅধ্যয়ন করতে থাকেন। সেই অল্প বয়সেই তার নাট্যদলের জন্য বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে চাষার সঙশকুনীবধ,রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙদাতা কর্ণআকবর বাদশাহকবি কালিদাসবিদ্যাভূতুম,রাজপুত্রের গানবুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁএবং মেঘনাদ বধ[১] একদিকে মসজিদ, মাজার ও মক্তব জীবন, অপর দিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের অনেক উপাদান সরবরাহ করেছে। নজরুল কালীদেবিকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা সঙ্গিত ও রচনা করেন, নজরুল তার শেষ ভাষনে উল্লেখ্য করেন - “ কেউ বলেন আমার বানী যবন কেউ বলেন কাফের। আমি বলি ও দুটোর কোনটাই না। আমি শুধু হিন্দু মুসলিম কে এক জায়গায় ধরে নিয়ে হ্যান্ডশেক করানোর চেষ্টা করেছি, গালাগালি কে গলাগলি তে পরিণত করার চেষ্টা করেছি। ”
১৯১০ সালে নজরুল লেটো দল ছেড়ে ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন। লেটো দলে তার প্রতিভায় সকলেই যে মুগ্ধ হয়েছিল তার প্রমাণ নজরুল লেটো ছেড়ে আসার পর তাকে নিয়ে অন্য শিষ্যদের রচিত গান: "আমরা এই অধীন, হয়েছি ওস্তাদহীন / ভাবি তাই নিশিদিন, বিষাদ মনে / নামেতে নজরুল ইসলাম, কি দিব গুণের প্রমাণ", এই নতুন ছাত্রজীবনে তার প্রথম স্কুল ছিল রানীগঞ্জেরসিয়ারসোল রাজ স্কুল, এরপর ভর্তি হনমাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে যা পরবর্তীতেনবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশন নামে পরিচিতি লাভ করে। মাথরুন স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন কুমুদরঞ্জন মল্লিক যিনি সেকালের বিখ্যাত কবি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তার সান্নিধ্য নজরুলের অনুপ্রেরণার একটি উৎস। কুমুদরঞ্জন স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে নজরুল সম্বন্ধে লিখেছেন,
ছোট সুন্দর ছনমনে ছেলেটি, আমি ক্লাশ পরিদর্শন করিতে গেলে সে আগেই প্রণাম করিত। আমি হাসিয়া তাহাকে আদর করিতাম। সে বড় লাজুক ছিল।
যাহোক, আর্থিক সমস্যা তাকে বেশী দিন এখানে পড়াশোনা করতে দেয়নি। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। প্রথমে যোগ দেন বাসুদেবেরকবিদলে। এর পর একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা এবং সবশেষেআসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। এই দোকানে কাজ করার সময় আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহ'র' সাথে তার পরিচয় হয়। দোকানে একা একা বসে নজরুল যেসব কবিতা ও ছড়া রচনা করতেন তা দেখে রফিজউল্লাহ তার প্রতিভার পরিচয় পান। তিনিই নজরুলকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দেময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। ১৯১৫খ্রিস্টাব্দে তিনি আবার রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে যান এবং সেখানে অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৭ সাল পর্যন্ত এখানেই পড়াশোনা করেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষার না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। এই স্কুলে অধ্যয়নকালে নজরুল এখানকার চারজন শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এরা হলেন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল, বিপ্লবী চেতনা বিশিষ্ট নিবারণচন্দ্র ঘটকফার্সি সাহিত্যের হাফিজ নুরুন্নবী এবং সাহিত্য চর্চার নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়[১]

সৈনিক জীবন


সেনাবাহিনীতে নজরুল
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। প্রথমে কলকাতারফোর্ট উইলিয়ামে এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের জন্য সীমান্ত প্রদেশের নওশেরায় যান। প্রশিক্ষণ শেষে করাচি সেনানিবাসে সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন। তিনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগ থেকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় আড়াই বছর। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণসৈনিক কর্পোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পর্যন্ত হয়েছিলেন। উক্ত রেজিমেন্টের পাঞ্জাবী মৌলবির কাছে তিনিফার্সি ভাষা শিখেন। এছাড়া সহসৈনিকদের সাথে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে সঙ্গীতের চর্চা অব্যাহত রাখেন, আর গদ্য-পদ্যের চর্চাও চলতে থাকে একই সাথে। করাচি সেনানিবাসে বসে নজরুল যে রচনাগুলো সম্পন্ন করেন তার মধ্যে রয়েছে, বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী (প্রথম গদ্য রচনা), মুক্তি (প্রথম প্রকাশিত কবিতা); গল্প: হেনা, ব্যথার দান, মেহের নেগার, ঘুমের ঘোরে, কবিতা সমাধিইত্যাদি। এই করাচি সেনানিবাসে থাকা সত্ত্বেও তিনি কলকাতার বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার গ্রাহক ছিলেন। এর মধ্যে রয়েছেপ্রবাসীভারতবর্ষভারতীমানসীমর্ম্মবাণী,সবুজপত্রসওগাত এবং বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা। এই সময় তার কাছেরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং ফার্সি কবি হাফিজের কিছু বই ছিল। এ সূত্রে বলা যায় নজরুলের সাহিত্য চর্চার হাতেখড়ি এই করাচি সেনানিবাসেই। সৈনিক থাকা অবস্থায় তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। এ সময় নজরুলের বাহিনীর ইরাক যাবার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ থেমে যাওয়ায় আর যাননি।১৯২০ খ্রিস্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হলে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙে দেয়া হয়। এর পর তিনি সৈনিক জীবন ত্যাগ করে কলকাতায় ফিরে আসেন।

সাংবাদিক জীবন ও বিয়ে

যুদ্ধ শেষে কলকাতায় এসে নজরুল ৩২ নং কলেজ স্ট্রিটে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতিরঅফিসে বসবাস শুরু করেন। তার সাথে থাকতেন এই সমিতির অন্যতম কর্মকর্তামুজফ্‌ফর আহমদ এখান থেকেই তার সাহিত্য-সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু হয়। প্রথম দিকেই মোসলেম ভারতবঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা,উপাসনা প্রভৃতি পত্রিকায় তার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে উপন্যাসবাঁধন হারা এবং কবিতা বোধন, শাত-ইল-আরব, বাদল প্রাতের শরাব, আগমনী, খেয়া-পারের তরণী, কোরবানি, মোহরর্‌ম, ফাতেহা-ই-দোয়াজ্‌দম্‌, এই লেখাগুলো সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। এর প্রেক্ষিতে কবি ও সমালোচক মোহিতলাল মজুমদারমোসলেম ভারত পত্রিকায় তার খেয়া-পারের তরণী এবং বাদল প্রাতের শরাব কবিতা দুটির প্রশংসা করে একটি সমালোচনা প্রবন্ধ লিখেন। এ থেকেই দেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সমালোচকদের সাথে নজরুলের ঘনিষ্ঠ পরিচয় শুরু হয়। বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে কাজী মোতাহার হোসেন,মোজাম্মেল হককাজী আবদুল ওদুদমুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌, আফজালুল হক প্রমুখের সাথে পরিচয় হয়। তৎকালীন কলকাতার দুটি জনপ্রিয় সাহিত্যিক আসর গজেনদার আড্ডাএবং ভারতীয় আড্ডায় অংশগ্রহণের সুবাদে পরিচিত হন অতুলপ্রসাদ সেনঅবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরসত্যেন্দ্রনাথ দত্তপ্রেমাঙ্কুর আতর্থী,শিশির ভাদুড়ীশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মেলন্দু লাহিড়ী, ধুর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়,হেমেন্দ্রকুমার রায়, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ওস্তাদ করমতুল্লা খাঁ প্রমুখের সাথে। ১৯২১ সালের অক্টোবর মাসে তিনিশান্তিনিকেতনে যেয়ে রবীন্দ্রনাথের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তখন থেকে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু পর্যন্ত তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় ছিল।কাজী মোতাহার হোসেনের সাথে নজরুলের বিশেষ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।

তরুণ নজরুল
১৯২০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই ১২ তারিখে নবযুগনামক একটি সান্ধ্য দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হওয়া শুরু করে। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন শেরে-বাংলা এ.কে. ফজলুল হক- এই পত্রিকার মাধ্যমেই নজরুল নিয়মিত সাংবাদিকতা শুরু করেন। ঐ বছরই এই পত্রিকায় "মুহাজিরীন হত্যার জন্য দায়ী কে?" শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেন যার জন্য পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং নজরুলের উপর পুলিশের নজরদারী শুরু হয়। যাই হোক সাংবাদিকতার মাধ্যমে তিনি তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পান। একইসাথে মুজফ্‌ফর আহমদের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতি বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পেয়েছিলেন। বিভিন্ন ছোটখাটো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবিতা ও সঙ্গীতের চর্চাও চলছিল একাধারে। তখনও তিনি নিজে গান লিখে সুর দিতে শুরু করেননি। তবে ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গীতজ্ঞমোহিনী সেনগুপ্তা তার কয়েকটি কবিতায় সুর দিয়ে স্বরলিপিসহ পত্রিকায় প্রকাশ করছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে: হয়তো তোমার পাব দেখা, ওরে এ কোন স্নেহ-সুরধুনী- সওগাত পত্রিকার ১৩২৭ বঙ্গাব্দের বৈশাখ সংখ্যায় তার প্রথম গান প্রকাশিত হয়। গানটি ছিল: "বাজাও প্রভু বাজাও ঘন"। ১৯২১ সালের এপ্রিল-জুন মাসের দিকে নজরুল মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে গ্রন্থ প্রকাশক আলী আকবর খানেরসাথে পরিচিত হন। তার সাথেই তিনি প্রথম কুমিল্লার বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে আসেন। আর এখানেই পরিচিত হন প্রমীলা দেবীর সাথে যার সাথে তার প্রথমে পরিণয় ও পরে বিয়ে হয়েছিল।
তবে এর আগে নজরুলের বিয়ে ঠিক হয় আলী আকবর খানের ভগ্নী নার্গিস আসার খানমেরসাথে। বিয়ের আখত সম্পন্ন হবার পরে কাবিনের নজরুলের ঘর জামাই থাকার শর্ত নিয়ে বিরোধ বাধে। নজরুল ঘর জামাই থাকতে অস্বীকার করেন এবং বাসর সম্পন্ন হবার আগেই নার্গিসকে রেখে কুমিল্লা শহরে বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে চলে যান। তখন নজরুল খুব অসুস্থ ছিলেন এবং প্রমিলা দেবী নজরুলের পরিচর্যা করেন। এক পর্যায়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[৫]
নজরুল সাম্যবাদের একজন অগ্রদূত ছিলেন। তিনি মুসলিম হয়েও চার সন্তানের নাম হিন্দু এবং মুসলিম উভয় নামেই নামকরন করেন। যেমনঃ কৃষ্ণ মুহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ (বুলবুল), কাজী সব্যসাচী এবং কাজী অনিরুদ্ধ।[৬]

বিদ্রোহী নজরুল

তখন দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। নজরুল কুমিল্লা থেকে কিছুদিনের জন্য দৌলতপুরে আলী আকবর খানের বাড়িতে থেকে আবার কুমিল্লা ফিরে যান ১৯ জুনে- এখানে যতদিন ছিলেন ততদিনে তিনি পরিণত হন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মীতে। তাঁর মূল কাজ ছিল শোভাযাত্রা ও সভায় যোগ দিয়ে গান গাওয়া। তখনকার সময়ে তার রচিত ও সুরারোপিত গানগুলির মধ্যে রয়েছে "এ কোন পাগল পথিক ছুটে এলো বন্দিনী মার আঙ্গিনায়, আজি রক্ত-নিশি ভোরে/ একি এ শুনি ওরে/ মুক্তি-কোলাহল বন্দী-শৃঙ্খলে" প্রভৃতি। এখানে ১৭ দিন থেকে তিনি স্থান পরিবর্তন করেছিলেন।১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে আবার কুমিল্লায় ফিরে যান। ২১ নভেম্বর ছিল সমগ্র ভারতব্যাপী হরতাল- এ উপলক্ষে নজরুল আবার পথে নেমে আসেন; অসহযোগ মিছিলের সাথে শহর প্রদক্ষিণ করেন আর গান করেন, "ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও! ফিরে চাও ওগো পুরবাসী"- নজরুলের এ সময়কার কবিতা, গান ও প্রবন্ধের মধ্যে বিদ্রোহের ভাব প্রকাশিত হয়েছে। এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বিদ্রোহী নামক কবিতাটি। বিদ্রোহী কবিতাটি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় এবং সারা ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতিলাভ করে। এই কবিতায় নজরুল নিজেকে বর্ণনা করেনঃ-
আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ জ্বালা, চির লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,
চিত চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর !
আমি গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল করে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালবাসা তার কাকন চুড়ির কন-কন ।
...
মহা- বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
..........................
আমি চির বিদ্রোহী বীর –
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির !
১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ই আগস্ট নজরুল ধূমকেতুপত্রিকা প্রকাশ করে। এটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। ১৯২০-এর দশকে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এর পরপর স্বরাজ গঠনে যে সশস্ত্র বিপ্লববাদের আবির্ভাব ঘটে তাতে ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল। এই পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন,
কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু।
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।
পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে এই বাণী লিখা থাকতো। পত্রিকার ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২২ সংখ্যায় নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে প্রকাশিত হয়। এই রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ৮ নভেম্বর পত্রিকার উক্ত সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একই দিনে তাকেকুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ জানুয়ারিনজরুল বিচারাধীন বন্দী হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দী প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে এই জবানবন্দী দিয়েছিলেন। তার এই জবানবন্দী বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দীর জবানবন্দী নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে। এই জবানবন্দীতে নজরুল বলেছেন:
আমার উপর অভিযোগ, আমি রাজবিদ্রোহী। তাই আমি আজ রাজকারাগারে বন্দি এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত।... আমি কবি,আমি অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত। কবির কণ্ঠে ভগবান সাড়া দেন, আমার বাণী সত্যের প্রকাশিকা ভগবানের বাণী। সেবাণী রাজবিচারে রাজদ্রোহী হতে পারে, কিন্তু ন্যায়বিচারে সে বাণী ন্যায়দ্রোহী নয়, সত্যাদ্রোহী নয়। সত্যের প্রকাশ নিরুদ্ধ হবে না। আমার হাতের ধূমকেতু এবার ভগবানের হাতের অগ্নি-মশাল হয়ে অন্যায় অত্যাচার দগ্ধ করবে...।
১৬ জানুয়ারি বিচারের পর নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। নজরুলকে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে যখন বন্দী জীবন কাটাচ্ছিলেন তখন (১৯২৩ খ্রিস্টাব্দেরজানুয়ারি ২২) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। এতে নজরুল বিশেষ উল্লসিত হন। এই আনন্দে জেলে বসে আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসেকবিতাটি রচনা করেন।

অসুস্থতা


১৯৪০ সালে ৪২ বছর বয়সী নজরুল
নবযুগে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নজরুল বেতারে কাজ করছিলেন। এমন সময়ই অর্থাৎ ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তার অসুস্থতা সম্বন্ধে সুষ্পষ্টরুপে জানা যায় ১৯৪২খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে। এরপর তাকে মূলতহোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু এতে তার অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি। সেই সময় তাকে ইউরোপে পাঠানো সম্ভব হলে নিউরো সার্জারি করা হত। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। ১৯৪২ সালের শেষের দিকে তিনি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন। এরপর নজরুল পরিবার ভারতে নিভৃত সময় কাটাতে থাকে। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তারা নিভৃতে ছিলেন। ১৯৫২খ্রিস্টাব্দে কবি ও কবিপত্নীকে রাঁচির এক মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল নজরুলের আরোগ্যের জন্য গঠিত একটি সংগঠন যার নাম ছিল নজরুল চিকিৎসা কমিটি, এছাড়া তৎকালীন ভারতের বিখ্যাত রাজনীতিবিদ শ্যামা প্রসাদ মুখার্জিসহযোগিতা করেছিলেন। কবি চার মাস রাঁচিতে ছিলেন।
এরপর ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে নজরুল ও প্রমীলা দেবীকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনপাঠানো হয়। মে ১০ তারিখে লন্ডনের উদ্দেশ্যে হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন ছাড়েন। লন্ডন পৌঁছানোর পর বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তার রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। এদের মধ্যে ছিলেন: রাসেল ব্রেইন, উইলিয়াম সেজিয়েন্ট এবং ম্যাককিস্ক- তারা তিনবার নজরুলের সাথে দেখা করেন। প্রতিটি সেশনের সময় তারা ২৫০ পাউন্ড করে পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। রাসেল ব্রেইনের মতে নজরুলের রোগটি ছিল দুরারোগ্য বলতে গেলে আরোগ্য করা ছিল ছিল অসম্ভব। একটি গ্রুপ নির্ণয় করেছিল যে নজরুল "ইনভল্যুশনাল সাইকোসিস" রোগে ভুগছেন। এছাড়া কলকাতায় বসবাসরত ভারতীয় চিকিৎসকরাও আলাদা একটি গ্রুপ তৈরি করেছিলেন। উভয় গ্রুপই এই ব্যাপারে একমত হয়েছিল যে, রোগের প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা ছিল খুবই অপ্রতুল ও অপর্যাপ্ত। লন্ডনে অবস্থিত লন্ডন ক্লিনিকে কবির এয়ার এনসেফালোগ্রাফি নামক এক্স-রে করানো হয়। এতে দেখা যায় তার মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোব সংকুচিত হয়ে গেছে। ড: ম্যাককিস্কের মত বেশ কয়েকজন চিকিৎসক একটি পদ্ধতি প্রয়োগকে যথোপযুক্ত মনে করেন যার নাম ছিল ম্যাককিস্ক অপারেশন। অবশ্য ড: ব্রেইন এর বিরোধিতা করেছিলেন।
এই সময় নজরুলের মেডিকেল রিপোর্ট ভিয়েনার বিখ্যাত চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়। এছাড়া ইউরোপের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও পাঠানে হয়েছিল। জার্মানিরবন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জন অধ্যাপক রোঁয়েন্টগেন ম্যাককিস্ক অপারেশনের বিরোধিতা করেন। ভিয়েনার চিকিৎসকরাও এই অপারেশনের ব্যাপারে আপত্তি জানান। তারা সবাই এক্ষেত্রে অন্য আরেকটি পরীক্ষার কথা বলেন যাতে মস্তিষ্কের রক্তবাহগুলির মধ্যে এক্স-রেতে দৃশ্যমান রং ভরে রক্তবাহগুলির ছবি তোলা হয় (সেরিব্রাল অ্যানজিওগ্রাফি)- কবির শুভাকাঙ্খীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে ভিয়েনার চিকিৎসক ডঃ হ্যান্স হফের অধীনে ভর্তি করানো হয়। এই চিকিৎসক নোবেল বিজয়ী চিকিৎসক জুলিয়াস ওয়েগনার-জাউরেগের অন্যতম ছাত্র। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের৯ ডিসেম্বর কবিকে পরীক্ষা করানো হয়। এর ফলাফল থেকে ড. হফ বলেন যে, কবি নিশ্চিতভাবে পিক্‌স ডিজিজ নামক একটি নিউরন ঘটিত সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগে আক্রান্তদের মস্তিষের ফ্রন্টাল ও পার্শ্বীয় লোব সংকুচিত হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন বর্তমান অবস্থা থেকে কবিকে আরোগ্য করে তোলা অসম্ভব। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭ ডিসেম্বরতারিখে কলকাতার দৈনিক যুগান্তর পত্রিকাভিয়েনায় নজরুল নামে একটি প্রবন্ধ ছাপায় যার লেখক ছিলেন ডঃ অশোক বাগচি- তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ভিয়েনায় অবস্থান করছিলেন এবং নজরুলের চিকিৎসা সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। যাহোক, ব্রিটিশ চিকিৎসকরা নজরুলের চিকিৎসার জন্য বড় অংকের ফি চেয়েছিল যেখানে ইউরোপের অন্য অংশের কোন চিকিৎসকই ফি নেননি। অচিরেই নজরুল ইউরোপ থেকে দেশে ফিরে আসেন। এর পরপরই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ভিয়েনা যান এবং ড. হ্যান্স হফের কাছে বিস্তারিত শোনেন। নজরুলের সাথে যারা ইউরোপ গিয়েছিলেন তারা সবাই ১৯৫৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর রোম থেকে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।[৭]

বাংলাদেশে আগমন ও প্রয়াণ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে অন্তিম শয়নে কবি নজরুল ইসলাম
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেবাঙালিদের বিজয় লাভের মাধ্যমে বাংলাদেশনামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে।১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মে তারিখে ভারতসরকারের অনুমতিক্রমে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কবির বাকি জীবন বাংলাদেশেই কাটে। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বরতারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তনে তাকে এই উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে তাকে একুশে পদকেভূষিত করা হয়। একুশে পদক বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানসূচক পদক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এরপর যথেষ্ট চিকিৎসা সত্ত্বেও নজরুলের স্বাস্থ্যের বিশেষ কোন উন্নতি হয়নি। ১৯৭৪খ্রিস্টাব্দে কবির সবচেয়ে ছোট ছেলে এবং বিখ্যাত গিটার বাদক কাজী অনিরুদ্ধমৃত্যুবরণ করে। ১৯৭৬ সালে নজরুলের স্বাস্থ্যেরও অবনতি হতে শুরু করে। জীবনের শেষ দিনগুলো কাটে ঢাকার পিজি হাসপাতালে। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্টতারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নজরুল তার একটি গানে লিখেছেন, "মসজিদেরই কাছে আমায় কবর দিয়ো ভাই / যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই";- কবির এই ইচ্ছার বিষয়টি বিবেচনা করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী তাঁর সমাধি রচিত হয়।
তাঁর জানাজার নামাযে ১০ হাজারের মত মানুষ অংশ নেয়। জানাজা নামায আদায়ের পর রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম,মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, রিয়াল এডমিরাল এম এইচ খান, এয়ার ভাইস মার্শাল এ জি মাহমুদ, মেজর জেনারেল দস্তগীর জাতীয় পতাকা মন্ডিত নজরুলের মরদেহ বহন করে সোহরাওয়ার্দী ময়দান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গনে নিয়ে যান।[৮] বাংলাদেশে তাঁর মৃত্যু উপলক্ষ্যে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক দিবস পালিত হয়। আর ভারতের আইনসভায় কবির সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।R.f: ইউকিপিডিয়া