ব্ল্যাকহোল কিংবা কৃষ্ণ গহ্বরে কোনো কিছু পড়লে তা চিরতরে হারিয়ে যায়। এতদিন এমনটাই ধারণা করা হতো। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মতে কৃষ্ণ গহ্বর থেকে কোনো কিছু হারায় না। এমনকি কৃষ্ণ গহ্বর থেকে বের হওয়ার উপায়ও আছে।
গতকাল স্টিফেন হকিং সুইডেনের স্টকহোমে কেটিএইচ রয়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির আয়োজনে এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।স্টিফেন বলেন, ‘আপনি যদি মনে করেন আপনি ব্ল্যাক হোলে পড়ে আছেন। যেখান থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। কিন্তু না, ব্ল্যাক হোল থেকেও বের হওয়ার উপায় আছে।’
ধারণা করা হয়, ব্ল্যাকহোল মহাকাশের এমন একটা অঞ্চল যেখানকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি খুবই শক্তিশালী। ফলে এখানে কিছু পড়লে সেটার ভেতরকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বস্তুকে ভেতরের দিকে টেনে নিয়ে যায়। এমনকি ব্ল্যাকহোলের মাধ্যাকষর্ণ বলয় ভেদ করে আলোও বের হতে পারে না। এখানে যা কি কিছু পড়ে তা নিমিষেই হারিয়ে যায়।
গত ৪০ বছর ধরে পদার্থবিজ্ঞানীরা মহাকাশের এই ব্ল্যাকহোলের রহস্যভেদে কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাননি। পদার্থবিদদের ধারণা ব্ল্যাকহোলে কোনো তথ্য হারিয়ে গেলে তা আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সূত্র অনুযায়ী, এই তথ্য কেনো ভাবেই ধ্বংস হতে পারে না। কিন্তু সাধারণ আপেক্ষিকতা বলছে ব্ল্যাকহোলে পতিত তথ্য ধ্বংস হয়ে যায়।
অন্যদিকে হকিন্স বলছেন, এই তথ্য কোনো ভাবেই ব্ল্যাকহোলে হারিয়ে যেতে পারে না। তথ্য ঠিকই ব্ল্যাকহোলের সীমানা কিংবা ঘটনা দিগন্তে সংরক্ষিত থাকে।
ঘটনা দিগন্ত হলো ব্ল্যাকহোলের গোলক। যেটার খপ্পর থেকে কেনো কিছুই কোনো কিছু বের হওয়া অসম্ভব।
এদিকে স্টিফেন হকিংয়ের ভাষ্য, যেসব তথ্য ব্ল্যাকহোলে পড়েছে সেগুলো প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। তাই এটা কখনোই প্রাথমিক অবস্থায় তার সংরক্ষিত তথ্য ধ্বংস করবে না।
বক্তৃতায় স্টিফেন এও বলেন, ‘ ব্ল্যাকহোল আদতে ব্ল্যাক নয়। এটি কোনো কারাগারও নয়। এখান থেকে যেকোনো কিছু বের হয়ে হতে পারে। সম্ভবত এসব বস্তু ব্ল্যাকহোল থেকে বের হয়ে অন্য কোনো বিশ্বে চলে যায়।’
যদিও গত বছর স্টিফেন হকিংস বলেছিলেন ব্ল্যাকহোল বলতে কিছু নেই। তার নতুন বক্তৃতা নতুন ধারণার জন্ম দিলেও ব্ল্যাকহোলের রহস্য থেকেই গেলে।
r.f: বাংলামেইল
0 comments:
Post a Comment